কমবয়েসী মেয়ের সাথে কোন পুরুষ যৌন সম্পর্ক করলেও ‘বিয়ে করলে সে ক্ষমা পাবে’ – তুরস্কে এমন একটি আইন করার চেষ্টা ভেস্তে গেছে।
কিছুদিন আগে এই বিল উত্থাপনের পর তুরস্কের সমাজে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদ ওঠে। অন্যান্য দেশেও এর নিন্দা হয়। এর পর প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম বিলটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
বিলটিতে বলা হয়েছিল, কোন পুরুষ কমবয়েসী মেয়ের সাথে যৌন সম্পর্ক করার দায়ে অপরাধী হলেও সে যদি ওই মেয়েটিকে বিয়ে করে তাহলে সে ক্ষমা পেয়ে যাবে।
কিন্তু এর সমালোচকরা বলেন, এটা ধর্ষণ এবং কমবয়েসী মেয়েদের বিয়ে করার প্রবণতাকে বৈধতা দেবে। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থাও এ আইন পাস না করার আহ্বান জানিয়ে বলেছিল, এতে যৌন নিপীড়ন এব বাল্যবিবাহ মোকাবিলার প্রয়াস ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এর পর আজ তুরস্কের পার্লামেন্টে আইনটি পাসের কয়েক ঘন্টা আগে এটি ‘পুনর্বিবেচনার জন্য’ ফেরত পাঠানো হয়।
সরকার অবশ্য বলেছিল, যদি কোন পুরুষ কমবয়েসী মেয়েটি বা তার পরিবারের সম্মতি নিয়ে তাকে বিয়ে করে – তাহলে তার যেন শাস্তি পেতে না হয় – সেটাই আইনটির আসল উদ্দেশ্য ছিল।
তুরস্কের ফৌজদারি বিধিতে এর আগে ১৫ বছরের কম বয়েসী মেয়েদের সাথে যৌন সংসর্গকে যৌননিপীড়ন বলে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল, তবে জুলাই মাসে তুরস্কের সাংবিধানিক আদালত তা বাতিল করে দেয়।
তুরস্কে বাল্যবিবাহ একটি বড় সমস্যা। সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ গুল নিজেই ৩০ বছর বয়েসে বিয়ে করেন, যখন তার স্ত্রীর বয়েস ছিল ১৫ বছর।
২০০২ সাল থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে ১৮ বছরের কমবয়স্ক ৪ লক্ষ ৪০ হাজার নারী সন্তানের মা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৬ হাজারই ১৫ বছরের কমবয়স্ক। দেশটিতে শিশুদের যৌননিপীড়নও গত ১০ বছরে তিন গুণ বেড়েছে।
গত ১০ বছরে তুরস্কে ৪ লাখ ৩৮ হাজার বাল্যবিবাহ হয়েছে।